সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২৫ অপরাহ্ন
আমতলী প্রতিনিধি॥ বরগুনায় আলোচিত সন্দেহভাজন আসামি শানু হাওলাদারকে থানা হেফাজতে হত্যার ঘটনায় আমতলী মডেল থানার ওসি মো. আবুল বাশারকে প্রত্যাহার করে বরগুনা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। শুক্রবার (২৭ মার্চ) বিকালে বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলামের নির্দেশে বরগুনা পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে, একই ঘটনায় আমতলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনোরঞ্জন মিস্ত্রি ও ডিউটি অফিসার মো. আরিফুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ঘটনার তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ওসি আবুল বাশারের প্রত্যাহারের ঘটনায় সন্তোষ জানিয়ে শানু হাওলাদারের ছেলে সাকিব হোসেন বলেন, ‘দ্রুত সময়ের মধ্যে অত্যাচারী ওসিকে আইনের আওতায় এনে বিচার দাবি করছি। তিনিই টাকা না পেয়ে আমার বাবাকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন। আমি হত্যাকারী ওসির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
তদন্ত কমিটির প্রধান বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. তোফায়েল আহম্মেদ বলেন, থানায় আসামির মৃত্যুর ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত কাজ শুরু করেছি। অল্প দিনের মধ্যেই তদন্ত কাজ শেষ হবে। তিনি আরও বলেন, তদন্ত কমিটির সুপারিশের আলোকে আমতলী থানার ওসি আবুল বাশারকে প্রত্যাহার করে বরগুনা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বরগুনা সদর) মো. মহব্বত আলী ও সহকারী পুলিশ সুপার (আমতলী-তালতলী সার্কেল) সৈয়দ রবিউল ইসলাম।
উল্লেখ্য যে, গতকাল বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) সকালে আমতলী থানা পুলিশ হেফাজতে থাকা একটি হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামী শানু হাওলাদারের (৫০) মরদেহ পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মনোরঞ্জন মিস্ত্রীর কক্ষ থেকে গলায় ফাঁস দেয়া অর্ধ নগ্ন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি বাথরুমে যাওয়ার কথা বলে আসামী পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মনোরঞ্জন মিস্ত্রীর কক্ষে ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
তবে পরিবারের সদস্যরা বলেন, বিগত ২০১৯ সালের ৩ নভেম্বর উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের পশ্চিম কলাগাছিয়া গ্রামে কৃষক ইব্রাহীমকে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। আর এ ঘটনায় আসামি করা হয় শানু হাওলাদারের সৎ ভাই মিজানুর হাওলাদারকে। ২৩ মার্চ (সোমবার) রাত ১১ টায় পুলিশ মিজানুরকে ধরতে অভিযান চালায়। কিন্তু তাকে না পেয়ে শানু হাওলাদারকে আটক করে নিয়ে আসে।
পরে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মনোরঞ্জন মিস্ত্রী শানু হাওলাদারকে এই মামলায় না জড়িয়ে মুক্তি দেওয়ার শর্তে তার পরিবারের কাছে তিন লক্ষ টাকা দাবি করে। চাহিদা মোতাবেক টাকা না দিতে পারলেও শানু হাওলাদারের ছেলে সাকিব তার বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতন থেকে রক্ষা করতে ওসি মো. আবুল বাশারকে নগদ দশ হাজার টাকা ঘুষ দেন। তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে পুলিশ নির্যাতন করে শানু হাওলাদারকে হত্যা করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখে।
Leave a Reply